ডেস্ক রিপোর্ট।। ভুতুড়ে’ বিল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর গ্রাহকরা। জুন মাসের বিদ্যুৎ বিলের কাগজে হিসাব মিলছে না অধিকাংশ গ্রাহকের। অভিযোগ উঠেছে, পল্লী বিদ্যুতের ‘ঘাটতি মেটাতে‘ প্রতিটি বিলে অতিরিক্ত টাকা যোগ করে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতায় রাজগঞ্জ সাব জোনাল অফিস রয়েছে। গত জুন মাসে এ এলাকার অধিকাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গেই যোগ করা হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। মিটার রিডার গ্রাহকের বাড়িতে না এসে অফিসে বসে বিল তৈরি করছেন, যে কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বলছে, চাকরি স্থায়ীকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে সমিতির অনেকেই কর্মবিরতি আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় এমনটা হতে পারে।
রঘুনাথপুর গ্রামের শাহ আলম নামে এক গ্রাহক বলেন, রাজগঞ্জ সাব জোনাল অফিসের আওতার তার একটি বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প রয়েছে। নিজেরসহ অন্যান্য কৃষকদের ১৬ বিঘা জমিতে সেচ দেন। বোরো মৌসুমের পর দুই মাস সেচ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। গত মে মাসে ৫৫ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখিয়ে ৩৫৫ টাকা বিল করা হলে তা পরিশোধ করি। এরপর শুক্রবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় জুন মাসের বিলের কাগজ হাতে পায়। বন্ধ থাকা সেচ পাম্পে ৮৪৯ ইউনিটের বিপরীতে ৩ হাজার ৭১০ টাকা বিল করা হয়েছে।
অপর সেচ পাম্প মালিক সুলতান জমাদ্দার অভিযোগ করে বলেন, বোরো ও আমন মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে সেচ দিই। বন্ধ থাকা সেচ যন্ত্রে জুন মাসে ৭৪০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখিয়ে ৩ হাজার ২৫২ টাকা বিল করা হয়েছে।
শুধু শাহ আলম, সুলতান নন এমন ভুতুড়ে বিলের কাগজ পেয়েছেন, প্রভাষ মন্ডল, বিনোদ রায়, নূর ইসলাম, কামরুল হাসান, নাজির উদ্দিন। তারা সবাই সেচ পাম্পের মালিক। অন্য মাসের তুলনায় জুন মাসে তাদের অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে।
প্রভাষ মন্ডলের জুন মাসের বিল দেখানো হয়েছে ২ হাজার ৯৭ টাকা, বিনোদ রায়ের ১ হাজার ১৫২ টাকা, নূর ইসলামের ১ হাজার ৬১৫ টাকা, কামরুজ্জামানের ৯৮৪ টাকা ও নাজির উদ্দিনের ৫৬৪ টাকা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, গত মাসে মিটার রিডার সরেজমিনে বিল করতে আসেননি। হয়তো অফিসে বসেই তারা বিল তৈরি করেছেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে সমিতির এক মিটার রিডার বলেন, সারা বছরের পল্লী বিদ্যুতের বিলের মোটা অঙ্কের টাকা ঘাটতি দেখা যায়। জুন ক্লোজিং এ সেই ঘাটতি পূরণ করতে অনেক ক্ষেত্রে বাড়তি বিল তোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। বাড়তি বিল তুলতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
রাজগঞ্জ সাব জোনাল দপ্তরের এজিএম শাহজাহান বলেন, জুন ক্লোজিংয়ে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে। গ্রাহকরা অফিসে এসে অভিযোগ করলে তা সমাধান করে দেওয়া হবে।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল লতিফ কালবেলাকে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্দোলন চলছিল। রিডিং কাজে মাঠপর্যায়ে না যাওয়ায় কিছু ত্রুটি হতে পারে। অতিরিক্ত বিলের ব্যাপারে গ্রাহকদের অভিযোগ থাকলে তা সমাধান করা যাবে।
Discussion about this post