স্পোর্টস ডেস্ক।। যে উইকেটে বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ ৩১ রানের বেশি করতে পারলেন না, সেই উইকেটেই দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক। এরপরও অবশ্য প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
প্রায় দেড় বছর পর তিন নম্বরে নেমে দলের হাল ধরলেন। এরপর বৃষ্টির কারণে দুই দিন খেলা হলো না। দুই দিন পরে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ করা জায়গা থেকেই শুরু করলেন মুমিনুল হক। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি, যা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। এরপরও অবশ্য ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়তে পারলো না বাংলাদেশ।
অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় অল্প রানেই শেষ হলো সফরকারীদের ইনিংস। কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ২৩৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। একাই প্রায় অর্ধেক রান করেছেন মুমিনুল। দলের আর কোনো ব্যাটসম্যান ৪০ রানের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বৃষ্টির কারণে প্রথম দিনের খেলা পরিত্যক্ত হওয়ার আগে ৪০ রানে করে মুমিনুল। এরপর বৃষ্টির কারণে পরের দুই দিন একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। ৬ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে চতুর্থ দিন মাঠে নামেন মুমিনুল। এদিন সাবধানী শুরু করেন তারা, প্রথম পাঁচ ওভার থেকে নেন এক রান। এরপরও অবশ্য তাদের জুটি বড় হয়নি।
এদিন ৫ রান যোগ হতেই সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। ভারতের পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর দারুণ এক ইনসুইঙ্গার ছেড়ে দিতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। বুমরাহর করা ৪১তম ওভারের প্রথম বলে বেঁচে যান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ইনসাইড এজে সামান্যর জন্য রক্ষা পান তিনি, আসে চার রান। কিন্তু এরপরই বুমরাহর ডেলিভারি ছেড়ে দিতে গিয়ে ভেঙে যায় ১১ রান করা মুশফিকের স্টাম্প।
এরপর উইকেটে যাওয়া লিটন কুমার দাসকে সাবলীল মনে হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। মুমিনুলের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়া ডানহাতি উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান তুলে মারতে গিয়ে রোহিত শর্মার দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হন, ১৩ রান করেন তিনি। ভাঙনের সুর বেজে গেলেও একপাশ আগলে রাখেন মুমিনুল, তার সঙ্গে যোগ দেন সাকিব।
লিটনের মতো তিনিও চড়াও হতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে ফেরেন। ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা ইনিংসের ৫৬তম ওভারের পঞ্চম বলে ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে চার মারেন সাকিব। পরের বলেও একই কাজ করতে যান তিনি। কিন্তু এবার তার নেওয়া ‘ওয়ান হ্যান্ডেড শট’- এ বল উঠে যায় আকাশে। মিড অফে ফিল্ডিং করা সিরাজ পেছনে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচে ফিরিয়ে দেন ১৭ বলে ৯ রান করা সাকিবকে।
এরপর কেবল মেহেদী হাসান মিরাজ কিছুটা সময় সঙ্গ দেন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যাওয়া মুমিনুলকে। বুমরাহর বলে আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ২০ রান করেন মিরাজ। ১৭২ বলে ১৬টি চার ও একটি ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করা মুমিনুল ১৯৪ বলে ১৭টি চার ও একটি ছক্কায় ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন। বিদেশের মাটিতে এটা তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি।
প্রথম দিন বাংলাদেশের দুই ওপেনার ভালো শুরু করতে পারেননি। ৩৬ বলে ২৪ রান করেন সাদমান ইসলাম অনিক। ২৪ বলে রানের খাতা খুলতে পারেননি জাকির হাসান, বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বল খেলে শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যান তিনি। ভারতের পেসার বুমরাহ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান সিরাজ, অশ্বিন ও আকাশ দীপ। একটি উইকেট নেওয়া রবীন্দ্র জাদেজা খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে টেস্টে ক্রিকেটে নিজের ৩০০ উইকেট পূর্ণ করেন।
Discussion about this post