চকরিয়া থানার হাজতে রহস্যজনকভাবে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সদ্য টেকনাফ থানার দায়িত্বে থাকা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এখনো চকরিয়ায় যোগদান না করলেও ইতোমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। অতীত কার্যকালাপ, নানা বিতর্ক, ঘুষ–বানিজ্য, ইয়াবা কান্ডসহ একাধিক ঘটনার কারণে স্থানীয়দের মধ্যে তার নিয়োগ ঘিরে ব্যাপক ক্ষোভ ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ওসি গিয়াস উদ্দিনকে ঘিরে এর আগে নানা আলোচিত ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্র ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, তিনি পিতাকে না পেয়ে সপ্তম শ্রেণীর এক কিশোরকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনা ঘটান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালত তার বিরুদ্ধে রুল জারি করেছিল। বিষয়টি তৎকালীন সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত হয়।
দায়িত্ব পালনকালে একাধিকবার ঘুষ-বানিজ্যের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। থানায় মামলা নেওয়া বা তদন্তে সুবিধা দিতে অর্থ দাবি করা, আসামিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গোপনে ছাড়পত্র দেওয়ার মতো অভিযোগ ওঠে। সাংবাদিকদের সাথেও ঘুষ বানিজ্য ও হয়রানিমূলক আচরণে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। টেকনাফে দায়িত্ব পালনকালে ইয়াবা চক্রের সাথে যোগসাজশের অভিযোগে তিনি আলোচনায় আসেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়া ব্যবহার করে প্রভাব খাটানো, সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আর্থিক সুবিধা আদায়সহ একাধিক অভিযোগ স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা বলেন, “থানার ভেতরে কোনো নাগরিকের মৃত্যু কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যেকোনো অবস্থাতেই পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু মানে দায়িত্বহীনতা। এ ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি।”
তাদের মতে, এমন বিতর্কিত কর্মকর্তা যোগদান করলে চকরিয়ার পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
চকরিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে মনে করছেন, অতীত বিতর্ক ও অভিযোগের কারণে যদি ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন দায়িত্ব নেন, তাহলে এলাকায় বিচারহীনতা, হয়রানি ও মাদক চক্রের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যেতে পারে।
চকরিয়া থানার হাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ হলো। একই সাথে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত এক কর্মকর্তার যোগদানকে ঘিরে এলাকায় শঙ্কা আরও বেড়ে গেছে। এখন সবার দৃষ্টি স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের দিকে।