কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ভাঙতে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছাত্র প্রতিনিধি জিনিয়া শারমিন রিয়াসহ অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে উখিয়া সদরের ফলিয়াপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সড়কের একপাশে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় সরে যেতে বললেও শিক্ষকরা অবস্থান অব্যাহত রাখেন।
পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে অন্তত কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। আহতদের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে সকাল ১১টার দিকে হাসপাতালে আহতদের দেখতে গেলে পুলিশ আবারও অভিযান চালায় এবং ছাত্র প্রতিনিধি জিনিয়া শারমিন রিয়া (২০) ও দেলোয়ার হোসেন নওশাদ (২২)সহ আরও ৬/৭ জনকে আটক করে।
পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে অন্তত ২০জনকে। তার মধ্যে কয়েকজনের নাম সংগ্রহ করা গেছে তারা হলেন, (চাকরিচ্যুত হোস্ট টিচার) শিক্ষক শামিম (২৩), সুজন (২৬), মিনুয়ারা (২০), সাজিয়া বেগম (২৪), আসমাউল হোসনা (২৬)সহ আরো অনেকেই।
আন্দোলনকারী শিক্ষিকা সালমা আক্তার ও রিমা অভিযোগ করেন বলেন, “পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৩ জন গুরুতর আহত।”
গত তিন মাস ধরে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা পুনর্বহালের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছেন। মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও আমরণ অনশনসহ একাধিক কর্মসূচি পালন করলেও এখনো তাদের দাবি পূরণ হয়নি।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, “যাদেরকে আটক করা হয়েছে, অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে হবে। পাশাপাশি চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, আন্দোলনের নামে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ কঠিন অবস্থানে গিয়ে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই লাঠিচার্জ করা হয়েছে বলে দাবী করেন। তবে পরবর্তীতে আটকের বিষয়ে জানতে থানা পুলিশের সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যাইনি।
এ ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদ উখিয়া’র আহবায়ক- হামিদুল হক তিনি লিখেছেন, আপনি প্রশাসন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি যাওয়া এতগুলো পরিবারের কথা চিন্তা না করে আন্দোলনের অজুহাতে তাদের গ্রেফতার করে হয়রানি কার স্বার্থে করেছেন? আপনি তাদের শান্তি পূর্ণ আন্দোলন করার নিমিত্তে সহযোগিতা করার কথা, কিন্তু আজকে আপনাদের বিপরীত অবস্থান উখিয়া কে অশান্ত করে তুলতে পারে এই দ্বায় আপনাকে নিতে হবে। যে কোন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কে গণ অধিকার পরিষদ উখিয়া উপজেলা সমর্থন করে।এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বলপ্রয়োগের নিন্দা জানাচ্ছি।”
স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ ইয়াকিন নিজস্ব ফেইসবুক ক্ষুব্দ হয়ে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “ভইঙ্গা আর প্রশাসন খালতো ভাই স্থানীয়দের মা-বাব নাই!”