শাকুর মাহমুদ চৌধুরী উখিয়া থেকে।। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় পারিবারিক কলহ ও যৌতুকের দাবির জেরে মাত্র ১৯ বছর বয়সী এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী ঘটনার পরপরই পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৯ মে ২০২৫) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে উখিয়া থানাধীন হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বত্তাতলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুনা আক্তার (১৯) ওই এলাকার আমির আলীর কন্যা ও জাহেদুল ইসলামের স্ত্রী। জানা গেছে, রুনা আক্তার পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে নিজ বসতঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, অনেকক্ষণ দরজা না খোলায় সন্দেহ হলে ঘরের চালের টিন কেটে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। পরে ঝুলন্ত অবস্থায় রুনাকে উদ্ধার করে দ্রুত উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রুনার স্বামী জাহেদুল ইসলাম বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকা দাবি করে আসছিলেন। যৌতুক না পেয়ে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন তিনি। এসব নির্যাতনের কারণে রুনা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন।
স্থানীয় এক প্রতিবেশী বলেন, মেয়েটা অনেক কষ্ট করত। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই ওর সুখ ছিল না। স্বামী তার উপর নিয়মিত অত্যাচার করত।
খবর পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশের এসআই সাইফুদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসেন জানান, আমরা ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি কোনোভাবে প্ররোচিত আত্মহত্যা কিনা, সে বিষয়েও আমরা খতিয়ে দেখছি। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়, বরং সমাজে প্রচলিত যৌতুক নামক কুপ্রথার একটি নির্মম উদাহরণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।