প্রধান প্রতিবেদক
উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা গ্রামের বন বিভাগের জায়গা দখল করে বার্মাইয়া আব্দুল মতলবের ছেলে রোহিঙ্গা আনোয়ার প্রশাসনের লোক পরিচয়ে নিঃস্ব করেছে হাজার হাজার স্থানীয়দের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আনোয়ার একজন প্রকৃত রোহিঙ্গা। তার বাড়ি মায়ানমারের বুচিদং টং বাজারের গর্জনিয়া পাড়ায় । এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে তিনি মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন। এরপর তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে র্যাব- ৭ পরিচয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র এনআইডি কার্ড তৈরি করে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করেন আসছে।
অনেকে একাধিকবার তার আইডি কার্ড বাতিলের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ঢাকা, কক্সবাজার নির্বাচন অফিস ও উখিয়া নির্বাচন অফিসে আবেদন করার পরেও কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে জানান আবেদন করা অনেক স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তিনি প্রশাসনের লোক পরিচয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায় এবং ভয় ভীতি প্রদর্শন করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যায়। তার আইডি কার্ডের পিছনে ঠিকানার জায়গায় র্যাব ৭ এর নামও রয়েছে। এটাই তার প্রধান অস্ত্র। সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে ইয়াবা সহ চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে একাধিক বার বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশনের পরেও প্রশাসনের নজরে না আসায় এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তার নিয়ন্ত্রণে চলে বিভিন্ন অপরাধ। সে স্থানীয় হিসেবে গ্রামে স্থান করে নেওয়ার সুযোগে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে জড়িয়ে অস্ত্রপাচার সহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে রোহিঙ্গা আনোয়ারের বিরুদ্ধে। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে তার রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয় ও ভাই। তার বিরুদ্ধে ইয়াবা, অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ চোরাচালান ও রোহিঙ্গা নারী পাচারসহ নানান অভিযোগ রয়েছে। এমন দাবি করেন এলাকার বৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশু কিশোরও। আরো জানা যায়, তার একাধিক স্ত্রী রয়েছে। তাদের জন্য আলাদা আলাদা ৫টি বাড়িও আছে। রাজাপালং পশ্চিম হরিণ মারা পাগলা মকবুলের ঘোনা এলাকায় তার একটি বাড়ী রয়েছে। রাজাপালংয়ের হরিণ মারা স্টেশনের দক্ষিণ পাশে রয়েছে তার দ্বিতীয় বাড়ী। উখিয়ার কুতুপালং কচু বনিয়া রাস্তার মাথা এলাকায় আরো একটি বিলাশ বহুল বাড়ী রয়েছে। রত্নাপালং তেলি পাড়া এলাকায় রয়েছে বিলাশ বহুল বাগানবাড়ী এবং পর্যটন এলাকা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি লেকের পাহাড়ে তার আরো একটি বাড়ি রয়েছে।
রাজাপালং হরিণ মারার খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন ও রাজা পালং এর হরিণ মারা এলাকার নাপিতা ঘোনার মৃত মৌলভী আমির আলী ছেলে রফিক উদ্দিন জানান, আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা করে বিভিন্ন এলাকায় গড়েছেন আলিশান বাড়ি। তার স্বর্ণ চোরাচালান ও অস্ত্র পাচারের ব্যবসা আছে বলে জানা। এছাড়াও তিনি প্রশাসনের লোক পরিচয়ে মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করেন।
রাজাপালংয়ের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার ছৈয়দ নুর নামের এক ব্যক্তি জানান, আনোয়ার বিভিন্ন সময় প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে এলকায় ভুমি দখলসহ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছে যার ভুক্তভোগী আমি নিজেও।
এলাকাবাসীর দাবী, আনোয়ার একজন প্রকৃত রোহিঙ্গা হয়ে কিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র করেছেন কেউ জানে না। তার জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করে তাকে পুনরায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করা হোক। এবং তার বাংলাদেশের পরিচয়ে সমস্ত ডকুমেন্টস বাতিল করা হোক।
বার্মাইয়া আনোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রশাসনের সাথে দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে সোর্স হিসেবে কাজ করেছি। সেই সূত্র ধরে আমি চট্টগ্রামে নিয়মিত আসা যাওয়া করতাম। ২০০৮ সালের দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় আইডি কার্ড তৈরি করি। আমার বাড়ি নাইক্ষংছড়ি এলাকায়। যারা অভিযোগ করছে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
Discussion about this post