ডেস্ক রিপোর্ট।। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডুতে ভয়াবহ ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর হওয়া এ হামলায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার (১০ আগস্ট) জানিয়েছে, গত সোমবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছিলেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ড্রোন হামলার পর মরদেহের স্তূপ জমে গিয়েছিল। যারা বেঁচে গিয়েছিলেন তারা ওই সময় স্তূপে গিয়ে নিজেদের পরিবার-পরিজনের খোঁজ করছিলেন।
নিহতদের মধ্যে এক গর্ভবতী নারী ও তার দুই বছর বয়সী মেয়েও ছিল। কয়েক দিন ধরেই রাখাইন রাজ্যের সব জায়গায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই হচ্ছিল। সোমবারের এই হামলা সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গাদের উপর হওয়া হামলার মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী।
তিন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এই ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে আরাকান আর্মি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা এর বদলে সেনাবাহিনীর উপর দায় চাপিয়েছে। অপরদিকে সেনাবাহিনীও ভয়াবহ এ হামলার দায় বিদ্রোহীদের উপর দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে কর্দমাক্ত ভূমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মরদেহ। তাদের স্যুটকেস এবং ব্যাগও পাশেই পড়েছিল। ভয়াবহ হামলা থেকে বেঁচে ফেরা তিনজন জানিয়েছেন, ২০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন তিনি ৭০টি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। তবে রয়টার্স নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত হতে পারেনি।
অবশ্য কোথায় হামলা হয়েছে সেটি জানতে সমর্থ হয়েছে রয়টার্স। সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারের উপকূলীয় শহর মংডুতে ঘটেছে এ হামলা।
মোহাম্মদ ইলিয়াস নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, হামলায় তার গর্ভবতী স্ত্রী ও দুই বছর বয়সী মেয়ে আহত হয়। এরপর তাদের মৃত্যু হয়। যখন ড্রোন থেকে মানুষের উপর হামলা চালানো শুরু হয় তখন তিনি তাদের সঙ্গেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন।
তিনি জানিয়েছেন, তিনি কয়েকবার গোলার শব্দ শুনতে পান। ওই সময় নিজেকে বাঁচাতে শুয়ে পড়েন। উঠে দাঁড়িয়ে দেখেন তার স্ত্রী ও কন্যা গুরুতর আহত ও বেশ কয়েকজন আত্মীয় মারা গেছেন।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামলা থেকে তিনি, তার স্ত্রী ও নবজাতক বেঁচে গেছেন। এখন তিনি বাংলাদেশের একটি শরণার্থী ক্যাম্পে রয়েছেন। সামসুদ্দিন বলেছেন, হামলায় তিনি অনেককে নিহত ও আহত অবস্থায় গোঙাতে দেখেছেন।
Discussion about this post