ডেস্ক রিপোর্ট।।যশোর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে প্রশাসন। সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্ভয়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানানো হয়েছে। নেতারা বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক শিক্ষা সহাবস্থান ও সহমর্মিতার। একটি কুচক্রী মহল যশোরে যে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তা বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।
সভা থেকে সকলে পুলিশকে মাঠে নেমে দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানান।
সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানা, আওয়ামীলীগ নেতাদের বাসা, কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। এতে পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দেশের সব থানা থেকে পুলিশ চলে যায়। এতে থানার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাসান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবিরুল হক সাবু, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রুহুল কুদ্দুস, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মর্তুজা ছোট, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, হেফাজত ইসলাম যশোরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাসিরুল্লাহসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সভায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা বিশৃঙ্খলা সংঘাত ঠেকাতে হবে। সরকার পতনের পর যশোরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। যে দু-একটি ঘটনা ঘটেছে, তা আওয়ামী লীগের লোকজন সংঘটিত করেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
তিনি বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক শিক্ষা সহাবস্থান ও সহমর্মিতার। এ জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্ভয়ে ঘরে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি। একইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে মাঠে নামার আহ্বান জানান এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সভায় পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, যশোরের মানুষ ও আন্দোলনকারীদের উদারতা ও সহনশীলতার কারণে পুলিশের সঙ্গে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যে সকল পুলিশ সদস্য জনগণের উপরে অন্যায় অত্যাচার করেছেন, সেই সব নিপীড়ক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ সমাজের অংশ। তাদের ক্ষমা করে সমাজ গঠনে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। আগামীতে বৈষম্যের কোনো স্থান হবে না।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহল অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অপপ্রচার শুরু করেছে। গত দুই দিনে ৬১টি ঘটনার খবর পেয়েছি, যার ৫৭টি ভুয়া। যে ৪টি ঘটনা ঘটেছে, তা আমলে নেওয়ার মতো না।’ বিএনপি নেতারা সব ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।
সভায় জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের সদসদের নিয়ে কমিটি গঠন, মাইকিং, কমিউনিটি পেট্রোলিং ও সেনা সদস্যদের সঙ্গে পুলিশকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল ১২টায় সম্প্রীতি শোভাযাত্রা বের করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Discussion about this post